প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়েকে খুন করেন বাবা: পুলিশ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী পপি সরকার (১২) খুনের রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুছ ছালেক।।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরী মেয়েকে খুন করেন বাবা দিগেন্দ্র সরকার। ঘটনাস্থলে পাওয়া বিস্কুটের প্যাকেটের সূত্র ধরে এ হত্যারহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ
কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর এলাকায় একটি বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভাড়া থাকেন দিগেন্দ্র সরকার ও আশালতা সরকার দম্পতি। তাঁদের মেয়ে পপি শৈশব থেকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। সে লেখাপড়া করত না। পপি ছাড়াও তাঁদের আরেক কন্যাসন্তান রয়েছে। তাঁদের মূল বাড়ি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গুমগুমিয়া গ্রামে। দিগেন্দ্র সরকার পেশায় একজন মৎস্যজীবী।
সংবাদ সম্মেলনে ওসি আবদুছ ছালেক বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে সুলতানপুরে বাড়ির পাশে এক ব্যক্তির বাগানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পপি সরকারের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় দিগেন্দ্র সরকার বাদী হয়ে সুরমান মিয়া ও কাজল মিয়া নামের প্রতিবেশী দুই ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। এজাহারে বলা হয়, ওই দুই ব্যক্তি তাঁর মেয়েকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় লোকজনের কাছে বিচার চাওয়ায় তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে পপি সরকারকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন।
ওসি আবদুছ ছালেক আরও বলেন, সুরমান ও কাজলের সঙ্গে দিগেন্দ্রের আগে থেকে বিরোধ ছিল। তাঁদের কারণে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে তাঁদের ফাঁসানোর পরিকল্পনা করেন। তদন্তকালে পপির শয়নকক্ষের জানালায় একটি বিস্কুটের প্যাকেট পাওয়া যায়। তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে, দিগেন্দ্র ২৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় একটি দোকান থেকে ১০ টাকা দিয়ে বিস্কুটের প্যাকেটটি কেনেন। ওই দিন গভীর রাতে তিনি মেয়েকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে লাশ বাগানে নিয়ে ফেলে রাখেন। এরপর প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে প্যাকেটটি জানালায় ঝুলিয়ে রাখেন। এ ব্যাপারে গতকাল শনিবার দিগেন্দ্র সরকার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।