তীব্র শীত থাকবে আরও কয়েকদিন

9

কথায় বলে ‘মাঘে কাঁপে বাঘ’। তবে এ বছর আর মাঘ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি, পৌষের দ্বিতীয় ভাগ থেকেই বাঘ কাঁপানো শীত পড়ছে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে।

পঞ্জিকার হিসাবে বাঘ কাঁপা মাঘ আসতে বাকি এখনও ৭ দিন। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস, কুয়াশা। এ দুয়ের সমন্বয়ে তীব্র শীত জেঁকে বসেছে দেশজুড়ে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার তাপমাত্রা ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এটাই ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, আজ সারাদেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গাতে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ঢাকাতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আপাতত দিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে আগামীকাল থেকেই দিনের কুয়াশা অনেকটা কমে যাবে। তবে রাতের কুয়াশা থাকবে। মূলত আগামীকাল থেকে তাপমাত্রা একটু বাড়তির দিকে থাকলেও ১০ অথবা ১১ জানুয়ারি তাপমাত্রা ব্যাপকভাবে কমতে থাকবে। তার মানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নামতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ তথ্য অনুসারে ঢাকা, খুলনা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৭টি জেলার বিভিন্ন জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ আছে। ফরিদপুর, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, বগুড়া, নওগাঁ, নাটোর, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া এবং বরিশালের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।এ অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে আরও কয়েকদিন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবেই রাজধানীসহ দেশের অন্য জেলাগুলোতেও তীব্র শীত পড়ছে।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টা পর্যন্ত ঢাকার আকাশে সূর্যমামা হাসেনি। প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহন কম চলেতে দেখা গেছে। যে যানবাহনগুলো চলেছে সেগুলোর গতিও ছিল শ্লথ। হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে বাস, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন।

বরাবরের মতোই শীতের কারণে বিপাকে পড়েছেন অফিস, স্কুল-কলেজগামীসহ শ্রমজীবী মানুষ। অবর্ণনীয় কষ্ট পেতে দেখা গেছে রাজধানীর ছিন্নমূল মানুষদের।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক বলেন, আপাতত দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। এর ফলে কুয়াশার প্রভাব কিছুটা কমবে। আগামী পরশুদিনের মধ্যে কুয়াশা কমে যাবে এবং দিনের তাপমাত্রা বাড়বে। কুয়াশা কমলে দিনের বেলায় থাকবে না তবে রাতের দিকে কুয়াশা পড়তে পারে।

এদিকে বগুড়ায় বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এতে তীব্র শীতে কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। ফলে বাড়ছে ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়েরিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগ। জেলার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে রোগী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভুগছে শিশু ও বয়স্করা।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) জেলায় সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমের মধ্যে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছেন বগুড়া আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক শাহ আলম।

তিনি জানান, বগুড়ার উপর দিয়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার সকাল ৯টায় জেলায় ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি জেলায় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে নেমেছিল তাপমাত্রা। এরকম শৈত্যপ্রবাহ আরও দুই থেকে তিনদিন থাকতে পারে বলেও তিনি জানান।

দিনাজপুরেও পড়েছে হাড় কাঁপানো শীত। শনিবার জেলায় ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মতো নেমে আসা কুয়াশায় নাস্তানাবুদ উত্তরের জনপদ।

দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন জেলায় আজ মৌসুমের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৬ টায় বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৯ শতাংশ। সকাল ৯ টায় বাতাসের গতিবেগ নির্ণয় করা হয়েছে ০০৬ নটস।