আজিজ বোর্ডিং থেকে বলিউড, জীবনের নানা বাঁকে জেমস

75

দেশের ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয় তারকা জেমসের আজ জন্মদিন। নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করা এই জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা আজ ৫৮ বছরে পদার্পণ করেছেন। এই দিনে একনজরে দেখে নেওয়া যাক তাঁর জীবনের নানা বাঁকবদলের গল্প।

পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম। জন্ম ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর, নওগাঁয়। জেমস নামটি রেখেছিলেন তাঁর বাবা মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। মা জাহানারা খাতুন ছিলেন গৃহিণী

বাবার চাকরিসূত্রে জেমসের প্রথম স্কুল ছিল সিলেটের ব্লু-বার্ড স্কুল। তারপর রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল। আর নীলফামারী ও সিরাজগঞ্জের কলেজজীবনে কেটেছে দারুণ কিছু সময়। কলেজজীবনের পর জেমসের মাথায় ঢোকে গানের পোকা। পরিবারের কেউ কখনো গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ফলে বড় ছেলে জেমসের গায়কজীবন চাননি বাবা মোজাম্মেল হক ও মা জাহানারা খাতুন

জেমসের গায়কজীবন চাননি বাবা–মা; আর তাই অভিমানী জেমসকে ঘর ছেড়ে পথে নামতে হয়। সেই পথ চলতে চলতে তাঁর ঠিকানা হয়ে যায় চট্টগ্রামের কদমতলীর পাঠানটুলী রোডে মতিয়ার পুলের সেই আজিজ বোর্ডিংয়ের ৩৬ নম্বর কক্ষটি। জেমস বলছিলেন, ‘আড্ডা আর গান যা-ই হোক না কেন, সব ওখানেই। আজিজ বোর্ডিংয়ের দিনগুলো কখনো ভুলব না।’ আজিজ বোর্ডিংয়ে গানের কথা আর সুরের নেশায় ঘুমহীন অনেক রাত কেটেছে জেমসের। তারকা হয়ে ওঠার পর অবশ্য আর কখনোই সেখানে যাওয়া হয়নি তাঁর। তবে যে কক্ষে থাকতেন, সেখানে এখনকার বাসিন্দারা জেমসের জন্মদিনে কেক কাটেন প্রতিবছর। কখনো সময়-সুযোগ হলে ঢুঁ মারলেও মারতে পারেন, কথায় কথায় এমনটাও জানান জেমস

তারকা জেমসকে আজিজ বোর্ডিং কখনো পায়নি। পাননি তাঁর মা-বাবাও। গানের জগতে জেমসের সাফল্যের পারদ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আগেই দুজনই চলে গেছেন পৃথিবী ছেড়ে।

জেমস আমাদের নগরবাউল এবং ভক্তদের ‘গুরু’। বাংলাদেশের ব্যান্ডের এই মহাতারকার ভাষায়, ‘আমি তোমাদেরই লোক’। মঞ্চে উঠলে তিনি যতটা কাছের, মঞ্চ ছাড়তেই ততটা দূরের তারা। সংগীতশিল্পী জেমস আমাদের যতটা চেনা, ব্যক্তি জেমস অনেকটাই অজানা। গানের সুরে জীবনটা বাঁধতে আশির দশকের শুরুর দিকে যাত্রা শুরু করেছিলেন জেমস। আজও ছুটছেন। তাঁর একটা গানের কথা এ রকম, ‘চোরা সুরের টানে রে বন্ধু,/ মনে যদি ওঠে গান,/ গানে গানে রেখো মনে/ ভুলে যেয়ো অভিমান…’

ছোটবেলায় জেমস দুরন্ত ছিলেন। সেই সময়ের কথা মনে করে তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে সাঁতারে ভীষণ ঝোঁক ছিল। বেশ ভালো সাঁতরাতেও পারতাম। দুরন্ত আমি বন্ধুদের নিয়ে আশপাশের পুকুরে সাঁতার কাটতাম। নওগাঁয় থাকতে ১০-১২ বছর বয়সে সাঁতার কাটতে চলে যেতাম নদীতে। বেশ কয়েকবার তো সাঁতরে মাঝনদীতেও চলে গিয়েছিলাম

ই মেয়ে জান্নাত ও জাহানের সঙ্গে বাবা জেমস। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে জেমসের কাছে প্রশ্ন ছিল, আপনার সন্তানদের সম্পর্কে আমরা জানিই না বলা চলে। জেমস এ কথা শুনে স্বভাবসুলভ মাপা হাসি হেসে বললেন, ‘আমার গানের জীবনের বাইরে ব্যক্তিজীবনটা প্রকাশিত হোক, সেটা কখনো চাইনি। এ কারণেই হয়তো আমার পারিবারিক জীবনটা সেভাবে খুব কাছের কেউ ছাড়া সবার জানার সুযোগ হয়নি। এটা আমি শুরু থেকেই করে এসেছি। আমার তিন সন্তান—সবার বড় ছেলে দানেশ, তারপর মেয়ে জান্নাত ও জাহান

সবারই একটা মত, জেমস নিজেকে আড়াল করে রাখেন। কেন নিজেকে আড়ালে রাখেন—এমন প্রশ্নে জেমসের ব্যাখ্যা এ রকম, ‘একা থাকতে পছন্দ করি। তখন হয়তো নিজের মতো ভাবি, ভাবতে ভালো লাগে। চুপচাপ থাকলে কোনো একটা বিষয় নিয়ে ফোকাসড থাকা যায়। তবে, আমি তো গানের জন্য সব সময়ই অ্যাভেইলেবল। দেশে ও দেশের বাইরে স্টেজ শো করছি নিয়মিত। আমি নিজের মতো করে কাজ করতে পছন্দ করি। বাড়তি আড্ডা দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করি না

জেমসের অবসর কাটে কীভাবে? জেমস জানান, ‘সবাই যে রকম করে, আমারও তেমন। টেলিভিশন দেখি। বই পড়ি। ছবি তোলার একটা নেশা আছে, যখন সময় পাই ছবি তুলি। এভাবেই কেটে যাচ্ছে।’ সিনেমার মধ্যে ক্ল্যাসিকগুলো বেশি দেখেন জেমস। জেমসের প্রিয় লেখক অনেকেই। তাঁদের মধ্যে সবার আগে আছে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের নাম। এ ছাড়া নাগিব মাহফুজও প্রি